মহালয়া – : শাস্ত্রমতে মহালয়া হলো পিতৃপক্ষ এবং দেবী পক্ষের সন্ধিক্ষণ,অশ্বিন মাসে কৃষ্ণপক্ষ অমাবস্যার তিথি।এই দিনে পরলোকগত পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে জল দান বা তর্পণ করাহয়। এই তিথিতে তর্পণ করিলে পিতৃপুরুষরা নরক যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পান এবং আমাদের আর্শিবাদ দেন। এছাড়া এই দিনে দেবী দুর্গা পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন বলে বিশ্বাস করাহয়। মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গার বোধন করা হয়, বোধন অর্থ জাগরণ। শ্রাবণ মাস থেকে পৌসমাস দক্ষিণায়ণ, এই সময় দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই বোধন করে দেবতাদের জাগ্ৰত করা হয়। এই দিনে প্রত্যেক বাঙালি পরিবারে ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে এবং নিজ নিজ নিত্যকর্ম সেরে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে দেবী দুর্গার পবিত্র আহ্বান করে – জাগো দূর্গা, জাগো দশপ্রহণ ধারিণী,অভয়াশক্তি বলপ্রদায়ণী তুমি জাগো, তুমি জাগো — । এবং আকাশবাণী কলকাতা থেকে প্রচারিত মহিষাসুরমর্দিনী শোনে ।মাতৃবন্ধনার এই আহ্বান পবিত্র পূর্ণ তিথি মহালয়া। মহালয়ার পর দেবীপক্ষের শুক্ল প্রতিপদে ঘট বসিয়ে শারদীয়া দুর্গাপূজার সূচনা করা হয়।প্রতিপদ থেকে চলে শুধু ঘটে পূজা ও চণ্ডী পাঠ। ষষ্ঠী থেকে শুরু হয় পূজার প্রধান কার্যক্রম,ষষ্ঠাদিককল্পরম্ভা এবং সপ্তমী থেকে বিগ্ৰহ পূজা।
কোন সময় কত দিন পিতৃপক্ষ বলা হয় -: ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ প্রতিপদ থেকে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত ১৫ দিনকে পিতৃপক্ষ বলা হয়।
পুরান মতে ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ২৫ দিন নিজ নিজ বাড়ির কাছাকাছি চলে আসে। তাই এই গোটা পক্ষকাল ধরে চলে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ বা পিতৃপক্ষের শেষ দিন মহালগ্ল মহালয়াতে।
দেবীপক্ষ কত দিন -: পিতৃপক্ষের পরের দিন শুক্ল প্রতিপদ থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিন হলো দেবীপক্ষ।
তর্পণ -: প্রয়াত পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে জলদান হলো তর্পণ।মৃত পিতা,পিতামহ, প্রপিতামহ মাতা,মাতামহ,প্রমাতামহ, প্রভৃতি মৃত্যু দিবসে অথবা শুভ মহালয়ার দিন তর্পণ করা হয়। সাদা কাপড় পরে তর্পণ করা শ্রেয়। প্রথমে জলে নেমে স্নান করে ভিজে কাপড়ে নাভি পর্যন্ত জলে দাঁড়িয়ে দক্ষিণ দিকে মুখ করে তর্পণ করিতে হয়।